বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও থেকে: শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন। পৌষের শীতকে হারকে মানিয়ে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এ পৌরসভায় চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এর মধ্যে আ’লীগ ও বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থীর বাহিরে আছেন বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগও আছে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।
ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীর একাদিক নির্বাচনী অফিস গুড়িয়ে দিয়েছেন। বিধান অনুযায়ী ৩ টি ক্যাম্প থাকার কথা। কিন্তু নৌকার সমর্থিত প্রার্থী ৫ টি নির্বাচনী অফিস করায় ২ টি গুড়িয়ে দেয়। এ পৌরসভার সবকটি নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হবে ইভিএম এর মাধ্যমে নির্বাচন। অনেক ভোটারের অভিযোগ কোনদিন ইভিএম এ ভোট প্রদান করেননি তারা। তাতে কতটুকু সঠিক ভোট হবে তাই নিয়ে সংশয়ে ভোটার ও প্রার্থীরা।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগন্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ধাপে পৌর নির্বাচন। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের ব্যস্ততা বাড়ছে। চায়ের কাপ থেকে সর্বত্র আলোচনা চলছে কে হাসবে বিজয়ের হাসি। তবে ভোটাররা পৌরসভার রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার যিনি উন্নয়ন করবেন তাকেই ভোট দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছেন।
তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। পৌর এলাকার উন্নয়ন আর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা। ভোটাররাও প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তির হিসাব কষছেন।
প্রথম শ্রেণির পীরগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৪৭ জন আর মহিলা ১০ হাজার ৬৩২জন।
এ পৌর সভায় মেয়র পদে আ’লীগ, বিএনপির, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র থেকে ৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এর মধ্যে আ’লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন উপজেলা আ’লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকরামুল হক ও বিএনপির বিদ্রোহী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদিন। আ’লীগের বর্তমান মেয়র কশিরুল আলম দলীয় মনোনয়নে নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও তার পাশে কর্মী সমর্থক তেমন একটা দেখা যায়না। এদিকে সাবেক এমপি ইমদাদুল হকের ছোটভাই একরামুল হক বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করলেও তার পক্ষেই বেশিরভাগ নেতাকর্মী কাজ করছেন। কাজেই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বেশ বেকায়দায় রয়েছেন নৌকার প্রার্থী কসিরুল আলম। অপরদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম রাজা মনে করছেন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভোট হলে তিনি নির্বাচিত হবেন। জাপার অধ্যাপক তৈয়ব আলী জানান, পীরগঞ্জ পৌরসভা গঠনের ৩০ বছর অতিবাহিত হলেও পৌরসভার উল্লেখ্যযোগ্য উন্নয়ন হয়নি। পৌর এলাকায় কতজন প্রতিবন্ধি রয়েছেন তার হিসেব নেই পৌর কার্যালয়ে। কাজেই তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার সমন্বিত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিবন্ধিদের উন্নয়নে কাজ করবেন।
দলীয় সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী একরামুল হক এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জয়নাল আবেদীনকে দল থেকে বহিস্কার করা বহিস্কার করা হলেও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে শেষ পর্যন্ত ওই ২ প্রার্থীর মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিলহাস উদ্দিন জানান, প্রথম ধাপের নির্বাচনে পীরগঞ্জ পৌরসভার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহনের জন্য ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। ।
৬ জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও পীরগঞ্জ পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ৩২জন কাউন্সিলর ও ১২জন মহিলা কাউন্সিলর।
কে হাসবেন বিজয়ের হাসি তা নির্ধারিত হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে।